নগরীতে মানুষ যখন ঘুমে আচ্ছন্ন তখন শহরের বিভিন্ন স্থানে গন্ধযুক্ত আবর্জনার স্তুপ থেকে মানুষের ফেলে দেয়া খাবারের প্যাকেটের প্লাস্টিক সামগ্রী, দইয়ের কাপ, প্লাস্টিক বোতল, কাগজ কার্টুনসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র সংগ্রহের কাজে ব্যস্ত থাকেন রহমান। পরে সংগৃহীত এসব প্যাকেট পরিষ্কার করে ভাংড়ির দোকানে বিক্রি করে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ টাকা উপার্জন হয় তার।
বৃদ্ধ রহমান বলেন, আপন বলতে তার কেউ নেই। একটি ছেলে ছিল সেও তাকে এখন দেখে না। কোথায় চলে গেছে তাও জানেন না তিনি। নিজের থাকারও কোনো স্থায়ী ঠিকানা নেই। জোড়া গেটের পাশে একটি পেট্রোল পাম্পের পাশের ভবনের নিচে মাঝেমধ্যে ঘুমানোর সুযোগ করে দেন ওই ভবনের এক নিরাপত্তা প্রহরী।
আরও পড়ুন: শিক্ষকের মানবেতর জীবন: বিচারের জন্য নিরলস লড়াই
আরও পড়ুন: ভালো নেই খুলনার সাপুড়ে সম্প্রদায়
‘প্রতিদিন রাত ১২টার পর যখন নগরীর রাস্তা-ঘাট ফাঁকা হয়ে যায় তখনই ময়লা, ডাস্টবিন, আবর্জনার স্তুপ থেকে প্লাস্টিক সামগ্রী সংগ্রহ করি। সারারাত এই কাজ করে সকালে বিক্রি করি,’ বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘করোনা সময়ে লকডাউনে অনেক কষ্টের মধ্যে জীবন গেছে। তাছাড়া অনেকে এসে ধমক দিয়ে চলে যায়, কিন্তু কি করব এখন তো বয়স হয়ে গেছে, ভারি কোনো কাজও করতে পারি না। কায়িক পরিশ্রম করতে পারলে কী কেউ এই গন্ধযুক্ত ডাস্টবিনের আবর্জনার স্তুপে নামে?’
তবে, শেষ জীবনে সরকারিভাবে কোনো সহযোগিতা পেলে তাকে হয়তো এই কাজ করতে হত না বলেও নিশ্বাস ছাড়েন তিনি।
এদিকে, বর্তমানে নগরীর বিভিন্ন স্থানে রাস্তার পাশে চলাচলের সময় দেখা যায়, ভবঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন পুরুষ ও নারীরা এই শীতের মধ্যে কষ্টে রাত্রীযাপন করছেন।
আরও পড়ুন: একটি ঘরের অপেক্ষায় গৌরদাস
আরও পড়ুন: পাবলিক টয়লেটে স্বামী-স্ত্রীর সংসার!
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে একই ঘরে গরুসহ বৃদ্ধার বসবাস
এ ব্যাপারে খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ হেলাল হোসেন বলেন, এ সকল ভবঘুরে পাগল, পথ শিশু ও শেষ জীবনে আশ্রয়হীন বৃদ্ধ, বৃদ্ধাদের কল্যাণে ও পথ শিশুদের শিক্ষাসহ বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য খালিশপুর পিএইচটি সেন্টারে একটি ভবন তৈরির প্রস্তাব করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনও কোনো চূড়ান্ত অনুমোদন হয়নি। তাছাড়া জেলা প্রশাসন সব সময় অসহায়দের কল্যাণে পাশে আছে। পাশপাশি স্থায়ী সমাধানের জন্য এই ভবন তৈরি করা হবে।
এ ব্যাপারে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রাণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নই, অফিস সময়ে আমাকে অবগত করবেন।